বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন

শিক্ষার্থীদের শাসনের অধিকার কেড়ে নেয়ায় শিক্ষক লাঞ্চনা বাড়ছে

শিক্ষার্থীদের শাসনের অধিকার কেড়ে নেয়ায় শিক্ষক লাঞ্চনা বাড়ছে

স্বদেশ ডেস্ক:

শিক্ষার্থীদের শাসন করা শিক্ষকদের নাগরিক অধিকার। সেই অধিকার আইন করে কেড়ে নেয়ার কারণেই শিক্ষক লাঞ্চনা বাড়ছে। যা জাতির জন্য খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে ও জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষকরা।

বুধবার (১১ অক্টোবর) চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর কর্তৃক শিক্ষককে চড় মারার ঘটনার প্রতিবাদে রংপুর জেলা স্কুল আয়োজিত প্রতিবাদ মানববন্ধনে এই মন্তব্য করেন শিক্ষকরা। এর আগে দুপুরে নগরীর ডিসির মোড় এলাকায় জেলা স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবাদী মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ সময় জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ আর মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন-সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রংপুর বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান, জেলা স্কুলের শিক্ষক সাহিনা সুলতানা, নিরঞ্জণ রায় ও হান্নান চৌধুরী প্রমুখ।

জেলা স্কুলের শিক্ষক সাহিনা সুলতানা বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ মানববন্ধন করছি এ কারণে যে ওই শিক্ষার্থীকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাহলে অন্য কেউ এ ধরণের ঘটনা ঘটানোর সাহস পাবে না। অভিভাবকদেরকে সন্তানদের ভালোভাবে শিষ্টাচার শেখানোর কথাও বলেন তিনি।’

মানববন্ধন চলাকালে রংপুর বিভাগীয় সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান বলেন, ‘সব দিক বিবেচনা করে আমরা যদি শিক্ষকের মর্যাদা দিতে না পারি। শিক্ষকরা যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারেন। তাহলে আমরা পিছিয়ে যাব। জাতী ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই দোষী শিক্ষার্থীর শাস্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা যে নিগৃহিত হয়, যে জায়গাগুলোতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করে যেসসব জায়গা কেড়ে নেয়া হয়েছে। সেগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে হবে। যার মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্ক নিশ্চিত হয়, শিক্ষক-অভিভাবক সুসম্পর্ক নিশ্চিত হয়। এ ধরণের উদ্যোগ নেয়া না হলে জাতীকে ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে।’

মানববন্ধনের সভাপতি রংপুর জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ আর মিজানুর রহমান বলেন,‘আমি যদি আমার সন্তানকে শাসন করতে পারি, তাহলে কেন আমি আমার সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীকে শাসন করতে পারব না। এটা আমার নাগরিক অধিকার, একজন শিক্ষক হিসেবে অধিকার, আমরা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের শাসন করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘একজন অভিভাবকের কাছে তার জীবনের সর্বোচ্চ সম্পদ হলো তার সন্তান। সেই সন্তানকে যখন মানুষ করবার জন্য, শেখানোর জন্য আমাদের কাছে ন্যাস্ত করে, তখন আমি মনে করি যে তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব আমাদের ওপর তারা ন্যাস্ত করে। তাহলে কেন আমরা এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন অভিভাবক যেভাবে অধিকার রাখে যোগ্যতা রাখে, তাহলে আমরা কেন সেই যোগ্যতার বাইরে যাব। সেকারণে সুশীল সমাজের চিন্তাভাবনার সাথে আমি একমত প্রকাশ করি না। কিন্তু যেহেতু আইনের প্রয়োগ আছে, আমাদের নির্দেশনা আছে। সেকারণে আমরা শিক্ষার্থীদের শাসন করতে পারি না। যার জন্যই শিক্ষার্থীরা আজকে এই পর্যায়ে চলে গেছে। সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন ধরণের আশ্রয়, প্রশয়ের কারণেই আজকের এই অবস্থা। এখান থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। শিক্ষকদের আইনের মারপ্যাচে ফেলে শাসন করার ক্ষমতা খর্ব করলে জাতী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877